ডিবির কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ

বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসে কর্মরত কনস্টেবল শেখ লিমনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, গর্ভপাত ঘটানো, শারীরিক নির্যাতন এবং হুমকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের বারাকপুর এলাকার এক নারী। তিনি শনিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী জানান, এক বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে কনস্টেবল লিমনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে এবং প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে লিমন তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাগেরহাট শহরের সোনাতলা এলাকায় তার কথিত এক বোনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তারা একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন।
আরও পড়ুন: সাদা পাথর রক্ষায় প্রশাসনের ৫ দফা সিদ্ধান্ত
ভুক্তভোগী নারীর দাবি, একপর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে লিমনের আচরণ বদলে যায়। গর্ভধারণের খবর জানার পর লিমন তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লিমন তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যান এবং জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটায়।
ওই নারী আরও জানান, এরপর তিনি বিয়ের দাবি জানালে লিমন জানায় যে, সে ইতোমধ্যে বিবাহিত এবং তাকে বিয়ে করতে পারবে না। বাধ্য হয়ে তিনি বাগেরহাট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে লিমন বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে তাকে হুমকি দিতে থাকেন। এ সময় সাংবাদিক পরিচয়ে হায়াত উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নারীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর মন্তব্য করে এবং টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার
ভুক্তভোগী নারী আরও অভিযোগ করেন, সোনাতলা এলাকার মৌসুমী ও নেহা নামে দুই নারীও তাকে প্রলোভন দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন এবং রাজি না হলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ অবস্থায় তিনি ডিবির ওসি’র কাছে অভিযোগ করলেও তিনি কোনো কথা শুনতে চাননি। বরং পরে লিমন ভিডিও কলে ইয়াবা দেখিয়ে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রতিনিয়ত লিমন ও তার সহযোগীদের দ্বারা হুমকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমার মানসম্মান ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি চাই, লিমনের স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি এবং এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কনস্টেবল শেখ লিমন বলেন, “ওই নারী একজন মাদক ব্যবসায়ী ও ইয়াবা সেবনকারী। বাগেরহাট শহরে এ ধরনের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে চাকরিজীবী ও ধনী ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই চক্রকে ধরতে গিয়ে আমি ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করি মাত্র। তার সঙ্গে আমার কোনো শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।”