বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ শুরু

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ ২০২৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি বছরের মতো এ বছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ পালন করছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সম্মিলিতভাবে অণুজীব প্রতিরোধী সক্ষমতা নিশ্চিত করুন’। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স (অকার্যকারিতা) সহনীয় মাত্রায় আনার জন্য সব পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সচেতনতা তৈরিতে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি ও বিতরণ করা যাবে না বলে এমন বিধান রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩ অনুমোদন দেয় সরকার। কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ওষুধের দোকানের নিবন্ধন বাতিল করা হবে। তবে আইন অনুমোদনের দুই মাস পার হলেও বাস্তবে প্রয়োগ নেই। অনেক দোকানি এই আইন পাসের বিষয়ে জানেনও না। গত দুই দিনে রাজধানীর ৫০টির বেশি ফার্মেসি ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। অ্যান্টিবায়োটিকের এমন অপব্যবহার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ও বড় বিপদে ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে একযোগে ২৯ কর্মকর্তার বদলি
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষের সতর্ক হওয়া জরুরি। এই আইন বাস্তবায়নে ওষুধের দোকানি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিয়ম সভা করা হয়েছে।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক কেনাবেচা বন্ধ এবং কারও কাছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে তথ্যসংবলিত রেজিস্ট্রারে সংক্ষরণ করার কথাও উল্লেখ রয়েছে আইনে। এমনকি অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার কমাতে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যান্টিবায়োটিকের মোড়কে লালচিহ্ন ব্যবহারের নির্দেশ দেয় ঔষধ প্রশাসন। তবে সেই নির্দেশনাও কার্যকর হয়নি। বাস্তবে এই আইন বা নির্দেশনা মানছে না কেউই।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ঘিরে আ. লীগ-ছাত্রলীগকে সড়কে নামতে দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের করা সমীক্ষার দেখা গেছে, দেশে করোনার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২১ সালে প্রতি হাজারে ৫২ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন কোনো না কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেছে। এর আগের বছর এই হার ছিল ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আমাদের দেশে রোগীরা ওষুধের দোকান থেকে মুখস্থ অ্যান্টিবায়োটিক ক্রয় করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেবন করে থাকেন এবং খুব দ্রুত রোগ থেকে মুক্তি চান। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের যথার্থ প্রয়োগ না হওয়ায় জীবাণুগুলো ধীরে ধীরে রেজিসট্যান্স হয়ে পড়ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোনও ওষুধ কিনতে হলে ডাক্তারের পরামর্শপত্র দেখাতে হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে গিয়ে অনেকে অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা খুবই জরুরি।