অভিযানে গিয়ে অর্থ লুট
সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ভাইসহ মাদকের তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে এক বাড়ি থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুটের অভিযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন। সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান।
ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগমের বাড়িতে ১৮ জুন সকালে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একদল কর্মকর্তা। ছালেহা বেগম অভিযোগ করেন, প্রথমে অভিযানে কোনো মাদক না পাওয়ায় কর্মকর্তারা গাড়ির তেলের খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে তিনি ১০ হাজার টাকা দেন এবং বাকি ১০ হাজার টাকা পরে মোবাইলের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
কিছুক্ষণ পর আবারও ওই কর্মকর্তারা তার বাড়িতে ফিরে আসেন এবং ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখান। এরপর ঘরের আলমারির তালা ভেঙে নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং তার ছেলের ঘর থেকে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন ছালেহা বেগম।
তিনি আরও জানান, টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তাকে এবং তার পুত্রবধূকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয় এবং একপর্যায়ে ভিডিওতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছালেহা বেগম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে যৌথ টহল, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসাথে মাঠে
অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের অফিস আদেশে বলা হয়, বরখাস্তকৃতদের আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুপুরের মধ্যে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জেলা উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, “তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত সম্পূর্ণ হলে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”