বইমেলার শেষ হচ্ছে আজ

৩১ দিনের পাঠক-লেখক-প্রকাশকের মিলনমেলা সাঙ্গ হচ্ছে আজ। আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা নামছে অমর একুশে বইমেলার। প্রকাশকদের অনুরোধে সময় বাড়ানোয় এবার মেলা গড়িয়েছে ২ মার্চ শনিবার পর্যন্ত। বৈশ্বিক করোনা মহামারি, যানজট এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গত কয়েক বছর ধরে বইমেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যে ভাটা পড়েছিল এবার মেট্রোরেলের কল্যাণে সেটি লাঘব হয়েছে। এ বছর শুরু থেকেই বইপ্রেমীদের জমজমাট উপস্থিতিতে সরগরম ছিল বইমেলার প্রতিটি দিন।
এদিকে প্রকাশকদের দাবির মুখে মেলার সময় দুই দিন সময় বাড়ানো হয়। সবাই আশা করেছিলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার হয়তো বেচাবিক্রি ভালো হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোকের ছায়া যেন পড়েছিল মেলায়ও। কারণ শুক্রবার হলেও মেলায় ছিল না আগের মতো উপচে পড়া ভিড়। যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে তো অবশ্যই, লেখক-প্রকাশকদের মধ্যেও ছিল শোকের ছায়া। আজ শনিবার শেষ দিনে মানুষ আবার মেলা জমিয়ে তুলবেন বলে আশা সবার।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, কোনো শক্তি বিলম্বিত করতে পারবে না: প্রেস সচিব
আগের মতো গতকাল শুক্রবার (১ মার্চ ) বেলা ১১টায় মেলা শুরু হয়। সকাল থেকে মেলা শুরু হলেও বিকেল ৫টার আগে ক্রেতাসমাগম ছিল সামান্য। সন্ধ্যায় মানুষের আনাগোনা খানিকটা বাড়ে। তবে আড্ডা থেকে শুরু করে সবখানেই ঘুরেফিরে এসেছে বেইলি রোডে প্রাণহানি প্রসঙ্গ।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু কষ্টের। ধারণা ছিল ছুটির দিনে পাঠকের ঢল নামবে। তবে বেইলি রোডের ঘটনায় অনেকেই আর মেলামুখী হননি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ মুজিবের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক যে কারণে
পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি ও অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাযহারুল ইসলাম বলেন, ছুটির দুই দিনের বিক্রির প্রত্যাশায় সময় বাড়ানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীবাসী থমকে গেছে। প্রকাশকদের অনেকেই জানিয়েছেন প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হয়নি আজ।
এদিকে বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্রের হিসাবে এ বছরের বইমেলায় নতুন বইয়ের সংখ্যা ৩ হাজার ৮০০-এর বেশি। গতকাল বর্ধিত দিনে মেলায় এসেছে ২১৯টি নতুন বই।
বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।