বগুড়ায় র্যাব-১২ হাতে জোড়া খুনের মূল আসামি গ্রেফতার

বগুড়ায় শনিবার (১৯ অক্টোবর) র্যাব-১২ কতৃক শহরের কলোনী করতোয়া এলাকা থেকে সাগর তালুকদার হত্যাসহ জোড়া খুন মামলার মূল আসামি শাবরুল কলাপাড়া হাটখোলা পাড়ার পান্নু তালুকদারকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়,দীর্ঘদিন থেকে হত্যা কান্ডের স্বীকার সাগর তালুকদার গ্রেফতারকৃত আসামী পান্নু তালুকদারকে পারভেজ হত্যা মামলা থেকে নাম কর্তনসহ ৩২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। পারভেজ হত্যা মামলার ১নং সাক্ষী ছিলো গ্রেফতারকৃত আসামী পান্নু তালুকদার (পারভেজের বড় ভাই)। হত্যা কান্ডের স্বীকার সাগর তালুকদার মামলা তুলে নেয়ার জন্য এবং ৩২লক্ষ টাকা চাঁদা না দিলে পান্নু তালুকদারকে বিভিন্ন ভাবে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো। এরই প্রেক্ষিতে নিজের জীবন বাঁচাতে,এলাকায় স্বাভাবিক ভাবে বসবাস করতে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে এই জোড়া হত্যা কান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে জানা যায়।
আরো জানা যায়,শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল ছোট মন্ডল পাড়ার ১৭টি হত্যা মামলার আসামী সাবরুল গ্রামের গোলাম মোস্তফা তালুকদারের ছেলে সাগর তালুকদার (৩৪) একই গ্রামের তার সহযোগী সাইফুল ইসলামের ছেলে স্বপন প্রামাণিক (২৮) ও সাবরুল হাটখোলাপাড়া গ্রামে আনসার আলী'র ছেলে মোক্তার (২৮) গত ২২ সেপ্টেম্বর আনুমানিক ৬টা ২০মিনিটে মোক্তারের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল করে দেসমা হোদ্দপুর গ্রামের সাগর তালুকদারের পত্তন নেয়া পুকুরে মাছের খাবার দেয়ার জন্য যায়। পুকুর থেকে ফেরার সময় আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল ছোট মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে শফিকুল ইসলাম মন্ডল (৪৫) তার বাড়ীর পূর্ব পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছা মাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামীগণের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি,চাকু,রামদা ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে উক্ত মোটরসাইকেলের সামনে এসে পথ রোধ করে দাঁড়ায়। এসময় তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি ভাবে কোপানো শুরু করে। এতে সাগর তালুকদারের মাথার সামনের বাম পাশে,ঘাড়ের পিছনের অংশ,হাটুর নিচে গিরার উপর,কোমরের ডান পাশে,পিঠের উপরে উপর্যুপরি কোপ মেরে মাথার মগজ বের করে ফেলে। এছাড়াও রক্তাক্ত জখম করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে উক্ত মোটর সাইকেলে থাকা বাকি ২জন মোটর সাইকেল থেকে নিচে পড়ে গেলে স্বপন প্রামাণিকের মুখে আঘাত করে থুতনিসহ দাতের মাড়ি থেতলিয়ে দেয় এবং ভাঙ্গা ও গুরুতর জখম করে। রামদা দিয়ে স্বপন প্রামাণিকের ডান পায়ের গোড়ালির উপরের অংশে কোপ দিয়ে পায়ের গোড়ালির রগ কেটে দেয়। আর হাতের বাহুর পিছনে পিঠের অংশে,চাইনিজ কুড়াল দিয়ে একাধিক বার শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটাসহ রক্তাক্ত জখম করে। উক্ত সকল আসামী মিলে তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে স্বপন প্রামাণিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ দিয়ে কাটাসহ গুরুতর জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মোটরসাইকেলে থাকা মোক্তার ঘটনাস্থল থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত মোক্তার এলাকায় ফিরে আসেনি। উক্ত ধৃত আসামী মামলার সাজার হাত থেকে বাঁচতে স্থানীয় আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী হতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে বিভিন্ন কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্ম গোপনে ছিলো।
এবিষয়ে র্যাব-১২ বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং জানায় যে,উক্ত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত বিধি-ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিকটস্থ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।